পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনের ডামাডোলে তামিলনাড়ু, আসামের মতো রাজ্যগুলোর ভোটের ফল নিয়ে খুব একটা আলোচনা হচ্ছে না। অথচ গত কয়েক মাস নির্বাচনী লড়াই নিয়ে উত্তপ্ত ছিল এসব এলাকাও। রোববার পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি ভোটগণনা হয়েছে আরও কয়েকটি রাজ্যে। সেখানে এককভাবে কোনও দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি, জয় এসেছে জোটবদ্ধভাবে।
তামিলনাড়ুর বিধানসভা নির্বাচনে জিতে ক্ষমতা দখল করতে চলেছেন ডিএমকে নেতা এম কে স্ট্যালিন। বুথফেরত জরিপ বলছে, রাজ্যটির ২৩৪ আসনের মধ্যে ১৫৫টিতে জিততে চলেছে ডিএমকে-কংগ্রেস-বাম জোট। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বী এডিএমকে-বিজেপি-পিএমকে জোট পেতে পারে ৭৮টি আসন।
তামিলনাড়ুতে আশির দশকের শেষপর্ব থেকে পাঁচ বছর পরপর সরকার বদলের ধারা শুরু হয়েছিল। কিন্তু ২০১১ এবং ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জিতে সেই ধারার অবসান ঘটান এডিএমকে নেতা জয়ললিতা। এবার তার অবর্তমানে দলীয় বিরোধে বিধ্বস্ত এডিএমকে’র ক্ষমতা থেকে বিদায় নিশ্চিত ধরে নিয়েছিলেন অনেকেই। তাদের আসন সংখ্যা পঞ্চাশেরও নিচে নেমে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিল একাধিক বুথফেরত জরিপ। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।
অতীতে বাবা এম করুণানিধির মন্ত্রিসভায় উপমুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন স্ট্যালিন। এবারই প্রথম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন তিনি।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে ক্ষমতা ধরে রাখার পাশাপাশি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পুদুচেরিতেও এবার দখল করতে চলেছে বিজেপি জোট। ১২৬ আসনের আসাম বিধানসভায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট ৭৪ এবং কংগ্রেস জোট ৫০টি আসনে জিততে চলেছে। এর মধ্যে এককভাবে বিজেপি ৫৮টি আসনে জিততে পারে।
আসামে ২০১৬ সালের নির্বাচনে ৬০টিতে জিতেছিল বিজেপি। তার দুই সহযোগী দল আসাম গণ পরিষদ (অগপ) এবং বিপিএফ জিতেছিল যথাক্রমে ১৪ এবং ১২টিতে। সেবার আলাদা লড়ে কংগ্রেস ২৬ এবং সংখ্যালঘুদের দল এআইইউডিএফ ১৩টিতে জেতে। এবার এআইইউডিএফ এবং বিপিএফের পাশাপাশি সিপিআই (এমএল লিবারেশন)-সহ তিন বাম দল, আরজেডি’র সঙ্গে সমঝোতা করে কংগ্রেস। এনআরসি-সিএএ বিরোধী আন্দোলনের নেতা অজিত ভুঁইয়ার দল আঞ্চলিক গণ মোর্চাও এই জোটে সামিল হয়।
অন্যদিকে, বিপিএফের বদলে কংগ্রেসের সাবেক সঙ্গী ইউপিপিএল-এর সঙ্গে এবার জোট গড়েছে বিজেপি। ফল বলছে, ইউপিপিএল ছয় এবং বিপিএফ চারটি আসনে জিততে চলেছে। পদ্ম শিবিরের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে আসাম গণ পরিষদ পাচ্ছে নয়টি আসন।
এবার পুদুচেরিতেও ক্ষমতা দখলের পথে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। সেখানে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এন রঙ্গস্বামীর দল এনআর কংগ্রেস এবং এডিএমকে’র সঙ্গে জোট বেঁধেছিল বিজেপি। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির মোট ৩০টি আসনের মধ্যে ১৬টিতে এগিয়ে সেই জোট। সেখানে কংগ্রেস-ডিএমকে জোট এগিয়ে মাত্র আটটি আসনে।
পুদুচেরিতে গত নির্বাচনে কংগ্রেস ১৫টিতে জিতলেও এবার মাত্র তিনটি আসন পেতে চলেছে। ২০১৬ বিধানসভা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল কংগ্রেস-ডিএমকে জোট। কিন্তু শাসকজোটের কয়েকজন বিধায়কের দলত্যাগের জেরে সেখানে ফেব্রুয়ারিতে মুখ্যমন্ত্রী ভি নায়ায়ণস্বামীর নেতৃত্বাধীন সেই সরকারের পতন ঘটে। পরাজয়ের আশঙ্কায় এবার প্রার্থীই হননি কংগ্রেস নেতা নারায়ণস্বামী।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা